• 01919612090
  • consumer.crb@gmail.com

প্রধান পৃষ্ঠপোষক

 সিআরবি’র প্রধান পৃষ্ঠাপোষক

  বিপ্লবী বিনোদবিহারী চৌধুরী

 সিআরবি’র পটভূমি :                               

জাতীয় স্বেচ্ছাসেবী ভোক্তা ও মানবাধিকার সংগঠন সেলফ এইড ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা ডিজাইনার কে.জি.এম সবুজের সাংগঠনিক পরিকল্পনায় প্রতিষ্ঠিত হয় কাউন্সিল অব কনজিউমার রাইটস বাংলাদেশ-সিআরবি। সিআরবি একটি বেসরকারী, অরাজনৈতিক, অলাভজনক এবং স্বেচ্ছাসেবী ভোক্তা অধিকার সংগঠন। সেলফ এইড-এর ভোক্তা অধিকার সচেতনতা  ও  গবেষণা প্রকল্পভূক্ত  স্বতন্ত্র  সংগঠন হিসাবে ১৬ অক্টোবর ২০০৭ইং সিআরবি’র প্রতিষ্টিত হয় । ভারতীয় উপমহাদেশের বরেণ্য বিপ্লবী মাষ্টারদা সূর্যসেন-এর সহযোদ্ধা ও সেলফ এইড ফাউন্ডেশনের প্রয়াত চেয়ারম্যান বিপ্লবী বিনোদবিহারী চৌধুরী’র ১২০ মোমিন রোডস্থ বাসভবন বিপ্লবী কুটিরে জনসচেতনতা ও গবেষণা মূলক এই প্রকল্প সংগঠনের শুভ উদ্বোধন অনুষ্ঠিত হয়। তিনি সিআরবি’র প্রথম চেয়ার‌ম্যান ছিলেন। প্রাথমিক ভাবে এই প্রকল্প সংগঠনটি “কনজিউমার রাইটস ব্যুরো-সিআরবি” নামে যাত্রা শুরুর হলেও পবরর্তীতে কাউন্সিল অব কনজিউমার রাইটস বাংলাদেশ-সিআরবি নামেই রূপান্তর হয়। প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে স্বেচ্ছাসেবী/কনজিউমার এক্টিভিস্টদের মাধ্যমে ভোক্তা অধিকারে জন-সচেতনতা ও গবেষণা মূলক কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। নিরাপদ খাদ্যের নিশ্চয়তা বিধান ও  ভোক্তা অধিকার আইন ২০০৯ সংস্কার এবং ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ মন্ত্রণালয় প্রতিষ্ঠার দাবীতে গণ-স্বাক্ষর সংগ্রহের কাজ করছে। কাউন্সিল অব কনজিউমার রাইটস বাংলাদেশ-সিআরবি সমাজের সর্বস্তরে ভোক্তা অধিকার আইন বিষয়ে সচেতনতা তৈরি ও তা বাস্তবায়নে কৃত্রিম মূল্যবৃদ্ধি, ভোক্তাদের পণ্যে ভেজালের হাত থেকে রক্ষা করার জন্য একটি সামাজিক গোষ্ঠী হিসাবে কাজের সূচনা করে। সর্বস্তরে ভোক্তা ও ভাড়াটিয়া অধিকার প্রতিষ্ঠায় নিবেদিত প্রাণ, স্বেচ্ছাসেবী হিসাবে কর্মরত। এটি সামাজিক, অর্থনৈতিক, স্বাস্থ্য এবং ভোক্তাদের অধিকার এবং স্বার্থ সুরক্ষায় সদা সচেষ্ট।

কাউন্সিল অব কনজিউমার রাইটস বাংলাদেশ-সিআরবি সমাজের সর্বস্তরে ভোক্তা অধিকার আইন বাস্তবায়ন ও সর্বস্তরে ভোক্তা-ভাড়াটিয়া অধিকার প্রতিষ্ঠায়  নিবেদিত প্রাণ, স্বেচ্ছাসেবী, অরাজনৈতিক এবং অলাভজনক প্রতিষ্ঠান হিসাবে কর্মরত। ‘সেল্ফ এইড’ (Self Aid) জাতিসংঘ মানবাধিকার সনদ  (Bill of Rights)-এর উপর ভিত্তি করে ১৯৯২ইং সালে প্রতিষ্ঠিত। সমাজ সেবায় অনন্য অবদানের জন্য সংগঠনের চেয়ারম্যান বিপ্লবী বিনোদবিহারী চৌধুরী ২০০০ সালে গণ-প্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের স্বাধীনতা পদক অর্জন করেন। যুব উন্নয়নে অনন্য অবদানের জন্য ২০০২ সালে দেশের শীর্ষ সংগঠন হিসাবে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে অনুদান ও সম্মাননা লাভ করে। এই প্রতিষ্ঠানটি গণ-প্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের সমাজ কল্যাণ মন্ত্রণালয়, যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রনালয় এবং শিল্প মন্ত্রনালয় ভুক্ত বিসিক-এর অনুমোদিত ও স্বীকৃত স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন।

 

 সিআরবি’র স্থপতি  বিপ্লবী বিনোদবিহারী চৌধুরী’র জীবন বৃত্তান্ত

জন্ম শিক্ষাজীবন

বিনোদ বিহারী চৌধূরী ১৯১১ সালের ১০ জানুয়ারি চট্টগ্রাম জেলার বোয়ালখালি থানায় জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা কামিনী কুমার চৌধুরী ছিলেন পেশায় উকিল এবং মা রামা চৌধুরী ছিলেন গৃহিনী। তার স্ত্রীর নাম বিভা চৌধুরী। ছেলের নাম বিবেকান্দ্র চৌধুরী। চট্টগ্রাম জেলার ফটিকছড়ি থানার রাঙ্গামাটিয়া বোর্ড স্কুলে তার প্রাথমিক শিক্ষা শুরু হয়েছিল৷ সেখান থেকে তিনি ফটিকছড়ির প্রাচীন ও ঐতিহ্যবাহী শ্রেষ্ঠ বিদ্যাপীঠ ফটিকছড়ি করোনেশন আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়,বোয়ালখালির পি.সি. সেন সারোয়ারতলি উচ্চ বিদ্যালয়, চট্টগ্রাম কলেজে পড়াশোনা করেন। ১৯২৯ সালে মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট পরীক্ষায় কৃতিত্বের সাথে উত্তীর্ণ হওয়ার জন্য তাকে বৃত্তি প্রদান করা হয়৷ কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে মাধ্যমিক ও উচ্চতর শিক্ষা লাভ করেন। ১৯৩৪ এবং ১৯৩৬ সালে ব্রিটিশ রাজের রাজপুতনার ডিউলি ডিটেনশন ক্যাম্পে বন্দী অবস্থায় থাকার সময় তিনি প্রথম শ্রেণীতে আই.এ. এবং বি.এ. পাস করেন।

কর্মজীবন

বিনোদবিহারী চৌধুরী ১৯৩০ সালে কংগ্রেস চট্টগ্রাম জেলা কমিটির সহ-সম্পাদক ছিলেন। এছাড়া ১৯৪০-১৯৪৬ সালে বঙ্গীয় প্রাদেশিক কংগ্রেস নির্বাহী কমিটির সদস্য থাকার পাশাপাশি ১৯৪৬ সালে কংগ্রেস চট্টগ্রাম জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। ১৯৪৭ সালে ৩৭ বছর বয়সে পশ্চিম পাকিস্তান কংগ্রেসের সদস্য হন তিনি। ১৯৫৮ সালে আইয়ুব খান সামরিক আইন জারির মাধ্যমে সব রাজনৈতিক দলকে বেআইনি ঘোষণা করলে রাজনীতি থেকে অবসর নেন তিনি ৷ এর মধ্যে তিনি ১৯৩৯ সালে দৈনিক পত্রিকার সহকারী সম্পাদক হিসাবে তার কর্মজীবন শুরু করেন। এরপর ১৯৪০ সালে চট্টগ্রাম কোর্টের একজন আইনজীবী হিসাবে অনুশীলন শুরু করেন। কিন্ত অবশেষে তিনি তার দীর্ঘ কর্মজীবনে শিক্ষকতাকেই পেশা হিসাবে গ্রহণ করেন।

বিপ্লবী জীবন

বিপ্লবীদের দলে নাম লেখানোর অল্প দিনের মধ্যেই বিনোদবিহারী চৌধুরী মাস্টারদা সূর্যসেনের প্রিয়ভাজন হয়ে উঠেছিলেন। ১৯৩০ সালের ঐতিহাসিক অস্ত্রাগার লুন্ঠনে বিনোদবিহারী চৌধুরী তাই হতে পেরেছিলেন সূর্যসেনের অন্যতম তরুণ সহযোগী। ১৯৩০ সালের ১৮ এপ্রিল চট্টগ্রামকে তিন দিনের জন্য স্বাধীন করেছিলেন তারা। টেলিগ্রাফ অফিস ধ্বংস করা, অক্সিলারি ফোর্সের সমস্ত অস্ত্রশস্ত্র লুট করেছেন। দামপাড়া পুলিশ লাইনে অস্ত্রের গুদাম ছিল, সেটাও তিনি ও দলের সদস্যরা মিলে লুঠ করেন। এ দলে ছিলেন মাস্টারদা সূর্য সেন সহ ছিলেন হিমাংশু সেন , অনন্ত সিংহ, গণেশ ঘোষ ও আনন্দ গুপ্ত।  ‘৩০সালের এ ঘটনার পর ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলন জঙ্গি রূপ ধারণ করে। সে দিনের এসব বিপ্লবীর দুঃসাহসিক কর্মকাণ্ড ব্যর্থ হয়নি। চট্টগ্রাম সম্পূর্ণরূপে ব্রিটিশ শাসন থেকে মুক্ত ছিল চার দিন। এই কয়েক দিনে ব্রিটিশ সৈন্যরা শক্তি সঞ্চয় করে বিপ্লবী দলের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়েছিল। বিপ্লবী মন্ত্রে দীক্ষিত বিনোদবিহারীরাও বীর বিক্রমে পরে জালালাবাদ পাহাড়ে যুদ্ধ চালিয়ে গিয়েছিলেন। জালালাবাদ যুদ্ধ ছিল বিনোদবিহারী চৌধুরীর প্রথম সম্মুখযুদ্ধ। গলায় গুলিবিদ্ধ হয়েও লড়াই থামাননি তার। চোখের সামনে দেখেছিলেন ১২ জন সহকর্মীর মৃত্যু।

পুরস্কার   স্বাধীনতা পদক (২০০০)

১৯৭৭ সালে চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় প্লাজা উদযাপন পরিষদ সমাজসেবী হিসেবে তাঁকে সম্মাননা প্রদান করে। ১৯৮৮ সালে চট্টলা ইয়ুথ কেয়ার দেশ সেবক হিসেবে সম্মাননা পান। ১৯৯৫ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় জাতীয় সংহতি পরিষদ কর্তৃক তিনি সম্মাননা পান। ১৯৯৮ সালে দৈনিক ভোরের কাগজ, ঢাকা, দৈনিক জনকন্ঠ, ঢাকা, চট্টগ্রাম পরিষদ কলকাতা কর্তৃক সেবাকর্মী হিসেবে সম্মাননা পান। ২০০১ সালে বিনোদবিহারী চৌধুরীকে স্বাধীনতা পদক প্রদান করা হয়।