• 01919612090
  • consumer.crb@gmail.com

পাবনায় করোনা মোকাবিলায় স্বেচ্ছাসেবীরা সবাই এক প্ল্যাটফর্মে

এ সময় পুলিশ সদস্যদের পাশাপাশি জনগণকে সচেতন করতে মাঠে নামে বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। কিন্তু এতে তৈরি হতে থাকে নানা বিশৃঙ্খলা। পরে জেলা পুলিশের উদ্যোগে ১০টি সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের তরুণ সদস্যদের নিয়ে তৈরি হয় ‘পাবনা জেলা স্বেচ্ছাসেবী পরিবার’। এই পরিবারে যোগ দেয় পাবনা ডেভেলপমেন্ট ফোরাম, জেলা ছাত্রলীগ, তারুণ্যের অগ্রযাত্রা, শেখ রাসেল ব্লাড ডোনারস ক্লাব, পাবনা ডিবেট সোসাইটি, সোনার বাংলা মা একাডেমি, ইয়েস ফাউন্ডেশন, ভয়েস ফর ভয়েস লেস ও পাবনা স্টুডেন্ট অ্যাসোসিয়েশনসহ ১০টি সংগঠনের ১৯০ জন সদস্য। পরে তাঁদের নিয়ে জেলা পুলিশ ‘মাস্ক আপ পাবনা’ নামে একটি প্রচার কার্যক্রম শুরু করে। একই সঙ্গে পুলিশ লাইনস হাসপাতালে শুরু করে করোনার টিকাদান কর্মসূচি। পুলিশ সদস্য ও স্বেচ্ছাসেবীদের নিয়ে টিকাদান কেন্দ্রটিতে তৈরি করা হয় সুশৃঙ্খল পরিবেশ। টিকা নিতে আসা ব্যক্তিদের জন্য তাঁবু টাঙিয়ে বানানো হয় অস্থায়ী বিশ্রামাগার।

জেলা স্বেচ্ছাসেবী পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, পুরো দলটিকে নিজে তত্ত্বাবধান করেন পুলিশ সুপার মহিবুল ইসলাম খান। প্রতিদিন পুলিশ সুপারের নির্দেশনা অনুযায়ী দলের সদস্যদের মধ্যে কাজ ভাগ করে দেওয়া হয়। ছোট ছোট উপদলে ভাগ হন ১৯০ জন সদস্য। এরপর তাঁরা টিকাদান কেন্দ্রে শৃঙ্খলা রক্ষা, টিকাদান ফরম পূরণ, দুস্থ ও অসহায় রোগীদের বাড়িতে অক্সিজেন পৌঁছে দেওয়া, সচেতনতামূলক প্রচারণা, রাস্তা ও বাজারে শৃঙ্খলা তৈরি, হাসপাতালে করোনা রোগীদের সহযোগিতা প্রদান এবং প্রতিবন্ধী ও বৃদ্ধদের বাড়িতে গিয়ে টিকা প্রদানসহ বিভিন্ন কাজ করেন।

পুলিশ লাইনস হাসপাতাল ও জেলা শহর ঘুরে দেখা গেছে, পুলিশ সদস্যদের পাশাপাশি মাঠে কাজ করছেন স্বেচ্ছাসেবী পরিবারের সদস্যরা। কেউ হাসপাতালে টিকা নিতে আসা ব্যক্তিদের লাইন করছেন, কেউবা ফরম পূরণ। অনেকেই আবার রাস্তায় দাঁড়িয়ে মানুষকে মাস্ক পরাচ্ছেন। কেউবা হ্যান্ড মাইক হাতে প্রচারণা চালাচ্ছেন ‘ঘরে থাকুন, মাস্ক পরুন’।

জেলা স্বেচ্ছাসেবী পরিবারের সদস্য ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন তারুণ্যের অগ্রযাত্রার প্রতিষ্ঠাতা জুবায়ের খান বলেন, ‘শুরুতে কাজে বিশৃঙ্খলা তৈরি হচ্ছিল। অনেক বাধা আসছিল। পুলিশ সুপার সবাইকে একটি প্ল্যাটফর্মে নিয়ে আসায় এখন সমন্বয় তৈরি হয়েছে। কাজ ভাগ করে একেকজন একেকটা করতে পারছি।’

পাবনার নাট্য সংগঠন ড্রামা সার্কেলের সভাপতি ওহিদুল কাউসার বলেন, করোনার শুরু থেকেই জেলা পুলিশের ভূমিকা ভালো ছিল। তারা মানুষের পাশে থেকেছে। সর্বশেষ সবাইকে এক প্ল্যাটফর্মে নিয়ে আসায় আরও একটি ভালো কাজের নজির সৃষ্টি হয়েছে। তরুণসমাজ বেকার বসে না থেকে মানুষের জন্য কাজ করতে পারছে।

পাবনা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের পরিচালক এ বি এম ফজলুর রহমান বলেন, মানুষের দুঃসময়ে পুলিশের এই উদ্যোগ সত্যিই প্রশংসনীয়। পুলিশ যে সত্যি জনগণের বন্ধু পাবনা জেলা পুলিশ সেটি প্রমাণ করেছে।

পুলিশ সুপার মহিবুল ইসলাম খান প্রথম আলোকে বলেন, ‘করোনার শুরু থেকেই আমরা মানুষকে সচেতন রাখতে চেষ্টা করেছি। কিন্তু লোকবল–সংকটের কারণে অনেক কিছুই পুলিশের একার পক্ষে করা সম্ভব হচ্ছিল না। ফলে যেসব তরুণেরা স্বেচ্ছায় কাজ করতে চান, তাঁদের নিয়ে এই জেলা স্বেচ্ছাসেবী পরিবার তৈরি করা হয়েছে। এখন পুলিশের পাশাপাশি তরুণসমাজ বহু ভালো কাজ করছে। এতে একটু হলেও মানুষের উপকার হচ্ছে বলে আমি মনে করি।’

তথ্যসূত্র : দৈনিক প্রথম আলো।